ময়মনসিংহ গীতিকার বিভিন্ন পালায় প্রাচীন জনপদ হুলিয়ারা গ্রামের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ময়মনসিংহের প্রাচীন ইতিহাসে পাওয়া যায় ‘‘দর্শা'' নামক স্থানটির কথা। যেখানে সম্রাট আকবরের সময় একটি কানুনগো-র কার্যালয় স্থাপিত হয়। অন্যদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে শেরপুর পরগনার অর্ন্তভূক্ত থাকাকালে ‘দর্শা' নদী পরাস্থ এ অঞ্চলটি দশসনা বন্দোবস্ত নেয় খাঁউপাধিধারী তিন সহোদর। পূর্ববঙ্গের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৬৬১-১৬৬২খ্রিষ্টাব্দেএ অঞ্চলে কোচদের একটি ছোট রাজ্য গড়ে উঠে যার রাজধানী স্থাপিত হয় দর্শা নদীর দ্বারা তিনদিকে বেষ্টিত কোন এক স্থানে। অন্যদিকে ময়মনসিংহ গীতিকায় যে হু (হুলিয়া) গ্রামের সন্ধান মিলে তার সময়কাল অনুমান ৩০০-৪০০ বছর পূর্বের। হুলিয়ারার পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে কেশর রায়ের রাজবাড়ির উল্লেখ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় কোচ রাজা বা কেশর রায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়িটিই বর্তমানে কাছাড় খাঁ নামে পরিচিত, যা দর্শা নদী দিয়ে তিন দিক থেকে বেষ্টিত।সার্বিক বিবেচনায় সময়টি১৬৫০-১৭০০খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোন এক সময়। তখন দর্শা নদীর ঘাট হয়ে নৌ পথে হালুয়াঘাট এর সকলব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হতো। হতে পারে হাল চাষীরা নানা কাজে এ ঘাট ব্যবহার করত বলেই এর নাম হালুয়াঘাট অর্থাৎ হালুয়া (গারো ভাষায় হাল চাষ করা) দের ঘাট হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করে অথবা এ ঘাটটি হালুয়া নামক ব্যক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল বলেই সেপস ‘হালুয়াঘাট'। এমনি ভাবেই সময়ের স্রোত বেয়ে জন্ম লাভ করে আজকের আধুনিক হালুয়াঘাট।
শিক্ষা-শিল্প –সাহিত্য-সংস্কৃতির পাদপীঠ হালুয়াঘাট প্রাচীন ঐতিহ্য উপজেলা হিসেবে এ উপমহাদেশে সুপরিচিত। এ এলাকার বিড়ই ধান, তাঁত শিল্প, কুটির শিল্প, মৃৎ ও কারু শিল্প, সালামের ষ্পঞ্জের মিস্টি, ঘোষের দোকানের রসমালাই, ইত্যাদি স্ব-স্ব স্বকীয়তা আজও বজায় রেখেছে। কালের বিবর্তনের ধারায় এসেছে অনেক কিছু, অনেক কিছু গেছে হারিয়ে হারায়নি এখানকার মানুষের আন্তরিকতাপূর্ণ আতিথেয়তা ও সামাজিক সম্পৃতি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস